====== আয়নোস্ফিয়ার ====== সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের নিউট্রাল গ্যাসের একটা অংশ আয়নিত করে ফেলে। পৃথিবীর সার্ফেস থেকে ৮০ কিমির বেশি উপরে পার্টিকেলের পরিমাণ কম হওয়াতে আয়নিত হওয়া এটম রিকম্বিনেশনের মাধ্যমে আবার নিউট্রাল হওয়ার সুযোগ খুব একটা পায় না। এজন্য এসব হাইটে চিরস্থায়ী প্লাজমার একটা অঞ্চল তৈরি হয় যার নাম আয়নোস্ফিয়ার। এই অঞ্চলের মাঝামাঝি জায়গায় ইলেক্ট্রনের নাম্বার ডেন্সিটি প্রতি সিসিতে প্রায় ১ লাখ, টেম্পারেচার প্রায় ১০০০ কেলভিন, আর ম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের শক্তি ১০ মাইক্রোটেসলার মতো। আয়নোস্ফিয়ার ৮০ কিমি থেকে শুরু করে উপরে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। উপরে এক পর্যায়ে এটা প্লাজমাস্ফিয়ারের সাথে মিশে যায়। প্লাজমাস্ফিয়ার হলো পৃথিবির রেডিয়েশন বেল্টের ভিতরে থাকা টরাস-শেইপের একটা অঞ্চল, যা পৃথিবির সাথেই চব্বিশ ঘণ্টায় একবার করে ঘুরে। এখানে ইলেক্ট্রনের টেম্পারেচার (৫০০০ কেলভিন) কম হলেও ডেন্সিটি (প্রতি সিসিতে ৫০০) অনেক। বিষুবাঞ্চলে এই স্ফিয়ার প্রায় ৪ আর্থ-রেডিয়াস পর্যন্ত বিস্তৃত। এর বাইরে ডেন্সিটি হঠাৎ প্রতি সিসিতে মাত্র ১-এ নেমে আসে, এবং এই বাউন্ডারির নাম প্লাজমাপজ। সার্ফেস থেকে অনেক উপরে পৃথিবীর প্লাজমা শিটের পার্টিকেল বৃষ্টির মতো ঝরে। এই কণাবৃষ্টির কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের নিউট্রাল পার্টিকেল আরো আয়নিত হয়। এবং এই প্রসেসের মাধ্যমে যে আলো তৈরি হয় তাকেই আমরা অরোরা বলি। অরোরা দেখা যায় পৃথিবীর ম্যাগ্নেটিক পোল ঘিরে থাকা একটা ওভাল শেলের মধ্যে। এই শেলের আকৃতি নির্ধারিত হয় প্লাজমা শিটের ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড লাইনের ডিস্ট্রিবিউশন দিয়ে। অরোরাল ওভালের মাঝখানে থাকে পোলার ক্যাপ যেখান থেকে ফিল্ড লাইন চলে যায় ম্যাগ্নেটোটেইলের লোব পর্যন্ত।