Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


১. জীবন ও তারা

এস্ট্রোনমির জন্ম এমন এক প্রাগৈতিহাসিক সময়ে যার কোনো রেকর্ড টিকে নেই। ইতিহাসের শুরুতে সবচেয়ে প্রাচীন লিখিত নথিতে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে এস্ট্রোনমিকেল ঘটনা ইতিমধ্যে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল, যেমন আমরা আজও আদিবাসী জাতিদের মধ্যে গ্রহতারা ও আকাশের ঘটনার অনেক জ্ঞান খুঁজে পাই।

কি কারণে আদিম মানুষ তার চোখ পৃথিবী থেকে উপরের আকাশের দিকে তুলেছিল? তারকাখচিত আকাশের সৌন্দর্য, অসংখ্য উজ্জ্বল বিন্দু যা বিভিন্ন উজ্জ্বলতা রং ও নকশায় বিস্ময়কর বৈচিত্র্য ধারণ করে, এসবই কি তার চোখে ধরা পড়েছিল? তাদের গতির সাবলীল নিয়মিতা আর মাঝেমধ্যে কিছু অনিয়মতাই কি এদের কারণ অনুসন্ধানে তার কৌতূহলকে প্ররোচিত করেছিল? পরবর্তী সময়ে এসব হতে পারে চালিকাশক্তি বা অনুপ্রেরণা, কিন্তু আদিম মানুষের জীবন নিরাপদ করার সংগ্রাম এত কঠিন ছিল যে সেখানে বিলাসিতার কোনো সুযোগ ছিল না। নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে তাকে প্রকৃতির শত্রুতাপূর্ণ শক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর অস্তিত্বের জন্য লড়াই করতে হতো। জীবনের লড়াই তার চিন্তা ও অনুভূতি পুরোপুরি দখল করে রেখেছিল, এবং এই সংগ্রামে তাকে প্রকৃতির বিভিন্ন ঘটনার এমন জ্ঞান অর্জন করতে হয়েছিল যা তার জীবনকে প্রভাবিত করে, কাজ নির্ধারণ করে; এসব সে যত ভালো জানত তার জীবন তত নিরাপদ হতো। এইভাবেই, তাই, এস্ট্রোনমিকেল ঘটনা তার জীবনে প্রবেশ করেছিল তার পরিবেশের অংশ ও তার কার্যকলাপের উপাদান হিসেবে, আকর্ষণ করেছিল তার মনোযোগ। বিজ্ঞানের জন্ম হয়েছিল কোনও বিমূর্ত সত্য বা জ্ঞানের তাগিদ থেকে নয়, বরং জীবনের অংশ হিসেবে, সামাজিক চাহিদা থেকে তৈরি স্বতঃস্ফূর্ত প্র্যাক্টিস হিসেবে।

দিন রাতের পরিবর্তনের এস্ট্রোনমিকেল ঘটনা মানুষ ও প্রাণীদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। আদিবাসীরা প্রায়ই সূর্যের উচ্চতা থেকে দিনের সময় নির্ভুলভাবে পড়ে নিতে পারত; তাদের দিনের কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে এর প্রয়োজন হত। মিশনারিরা উল্লেখ করেছেন যে পরিষ্কার দিনে আদিবাসীরা নির্দিষ্ট সময়ে সকালের সভায় উপস্থিত হতো, যেখানে মেঘলা দিনে তাদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ভুল হয়ে যেত। ইউরোপিয়ান কৃষকরাও এটি করতে পারত যতক্ষণ না গির্জার ঘড়ি ও পকেটঘড়ি এটি অপ্রয়োজনীয় করে তুলে। যখন আরও নির্ভুল পদ্ধতির প্রয়োজন ছিল, তখন ছায়ার দৈর্ঘ্য মাপা হত।

অন্য যে-ঘটনা মানুষের কার্যক্রম নির্ধারণ করে তা হলো ঋতুর পরিবর্তন। হাই ল্যাটিচুডে মরা শীত ও ভরা গ্রীষ্মের মধ্যে পরিবর্তন, আর বিষুবীয় অঞ্চলের কাছে খরা ও বৃষ্টির মৌসুমের মধ্যে পরিবর্তন। আদিম শিকারি ও জেলেরা প্রাণীদের জীবনচক্র ও স্থানান্তরের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কৃষক ও পশুপালকেরা তাদের কাজ, বপন ও ফসল সংগ্রহ এবং পশুর পাল চড়ানো ঋতুর মাধ্যমে পরিচালিত করত। তারা প্রকৃতির পরিবর্তনশীল দিকগুলির নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে পরিচালিত হত।

যখন শ্রম আরও জটিল রূপে বিকশিত হলো ও নতুন চাহিদা পাওয়া গেল, তখন আকাশের বিভিন্ন ঘটনার প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজনীয় হয়ে উঠল। যখন যাযাবর বা জেলেরা ভ্রমণকারী বণিক হয়ে উঠল, তারা দিকনির্দেশনার জন্য জ্যোতিষ্ক ব্যবহার করতে লাগল—দিনের বেলায় সূর্য ও রাতে তারা। এইভাবে চোখ ও মন তারার অভিমুখী হলো। আরবদের প্রাচীনতম সাহিত্যে তারাগুলোর নাম ছিল। প্রশান্ত মহাসাগরে পলিনেশিয়ান ও মাইক্রোনেশিয়ানরা, যারা অভিজ্ঞ নাবিক ছিল, তারা রাতের সময় নির্ধারণ করতে তারা ব্যবহার করত; তাদের উদয় ও অস্তের দুই বিন্দু সেলেশ্চাল কম্পাস হিসেবে কাজ করত, যার মাধ্যমে তারা রাতে জাহাজ চালাত। তাদের স্কুলে বাচ্চাদেরকে গ্লোবের মাধ্যমে এস্ট্রোনমির শিল্পে শিক্ষিত করা হতো। ইউরোপিয়ানদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে (যা তাদেরকে দৈহিক ও নৈতিকভাবে ধ্বংস করেছিল) এই স্বতঃস্ফূর্ত বিজ্ঞান হারিয়ে গেছে।

সময় পরিমাপ একটি দ্বিতীয় অনুপ্রেরণা যা জ্যোতিষ্কের ঘটনাগুলোর পর্যবেক্ষণ অনেক গভীরে নিয়ে গিয়েছিল। সময়ের হিসাব রাখা ছিল নেভিগেশনের পাশাপাশি সবচেয়ে প্রাচীন এস্ট্রোনমিকেল প্র্যাক্টিস যার থেকে পরবর্তীকালে বিজ্ঞান বিকশিত হয়েছে। সূর্য ও চাঁদের পিরিয়ড সময়ের হিসাব রাখার স্বাভাবিক একক, কিন্তু কখনও কখনও জ্ঞানের আরো উন্নত অবস্থার অদ্ভুত প্রডাক্ট হিসেবে অন্যান্য পিরিয়ডও আবির্ভূত হয়েছিল, যেমন মেক্সিকানদের মধ্যে ভেনাসের পিরিয়ড এবং ভারতীয়দের মধ্যে বৃহস্পতির পিরিয়ড। সূর্য ঋতুর মাধ্যমে তার বার্ষিক পিরিয়ড আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়, কিন্তু চাঁদের বিভিন্ন ফেইজের পিরিয়ড আরও স্ট্রাইকিং এবং স্বল্পতার কারণে আরও প্র্যাক্টিকেল। এজন্য ক্যালেন্ডার সাধারণত চাঁদ দিয়ে বানানো হত, শুধু সেই সব দেশে ছাড়া যেখানে জলবায়ু ও কৃষিকাজের ঋতু অমান্য করা অসম্ভব ছিল।

যাযাবর জাতির মানুষেরা তাদের ক্যালেন্ডার সম্পূর্ণভাবে ২৯.৫ দিনের সাইনডিক পিরিয়ড দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে, যত দিন পর পর চাঁদের কোনো ফেইজ আবার ফিরে আসে। প্রতিবার যখন নতুন চাঁদ (বড় হয় বলে যার নাম ‘ক্রেসেন্ট’) পশ্চিমের সন্ধ্যায় আকাশে একটি চিকন আর্ক হিসাবে দেখা দেয়, একটি নতুন মাস শুরু হয় ২৯ বা ৩০ দিনের; সুতরাং দিনের ঘণ্টাগুলি সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়। এইভাবে চাঁদ মানুষের প্রাকৃতিক পরিবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তু হয়ে উঠেছিল। ইহুদি মিদ্রাশ বলে: চাঁদ তৈরি করা হয়েছে দিন গোনার জন্য। প্রাচীন অনেক কালচারের বইই বলে যে চাঁদ সময় মাপার কাজে লাগে। এটাই ছিল মুন-কাল্টের ভিত্তি, যেখানে চাঁদের পূজা করা হয় জীবন্ত সত্তা হিসেবে, কারণ সে ওয়েক্সিং ও ওয়েনিঙের মাধ্যমে সময় রেগুলেট করে। তার প্রথম আগমন, এবং আরও বেশি তার পূর্ণতা (যখন সে রাতের অন্ধকার দূর করে) উদযাপন করা হত অনুষ্ঠান ও উৎসর্গের মাধ্যমে।

শুধু পূজা নয়, ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণও হয়েছিল, যা ২৭ বা ২৮টি মুন-স্টেশনের অদ্ভুত বিভাজন দেখলে বুঝা যায়। এগুলি হল তারার ছোট ছোট গ্রুপ, যারা একে অপরের থেকে প্রায় ১৩ ডিগ্রি দূরে অবস্থিত; চাঁদ আকাশগোলকে তার গতিপথে চলার সময় একেক রাতে একেক স্টেশন দখল করে। আরবদের কাছে এগুলি ‘মঞ্জিল’ নামে পরিচিত ছিল, ভারতীয়দের কাছে ‘নক্ষত্র’ নামে, এবং চীনারা এগুলিকে ‘শিউ’ (নিশানিবাস) বলত। যেহেতু এই তিন ক্ষেত্রে স্টেশনগুলোর বেশির ভাগই এক, তাই ধারণা করা হয়েছে যে এই তিন জাতি পরস্পর থেকে ধার করেছে। এদের মধ্যে কোন জাতি ছিল মূল উদ্ভাবক, না কি সবাই মেসোপটেমিয়ান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে এগুলি গ্রহণ করেছে, সে বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে, প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে উদ্ভাবন করার ব্যাপারটাও অসম্ভব মনে হচ্ছে না, যেহেতু অনেক মঞ্জিলই বেশ স্বাভাবিক তারা-গ্রুপ, অনেক ক্ষেত্রে রাশিচক্রের বারোটি আরো বড় কনস্টেলেশনের চেয়ে বেশি স্বাভাবিক। রামের মাথা, রামের পিছন ভাগ, প্লিয়াডিস, এল্ডিবারান সহ হায়াডিস, বৃষের শিং, অশ্বিনী ভাইদের পা, দুই জেমিনাই ক্যাস্টর ও পোলাক্স, ক্যান্সার, সিংহের মাথা (রেগুলাস সহ), এবং লিওর পিছন ভাগ (ডেনেবোলার সঙ্গে) সবই সুস্পষ্ট তারা-গ্রুপ। তবে তুলনামূলক কম প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক কিছু গ্রুপও তিন কালচারে এক রকম, যা ধার করার দিকে ইঙ্গিত করে। এটা জানা কথা যে চীন ও ভারতের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক বিনিময় হয়েছে, এবং সিন্ধে পুরনো সুমেরিয়ান টেক্সটের ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

তাহলে চাঁদের পিরিয়ড হলো ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে প্রাচীন ইউনিট। কিন্তু শুধু চাঁদ দিয়ে সময় মাপার ক্ষেত্রেও প্রকৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী পিরিয়ড ‘বছর’ ঠিকই প্রকাশিত হয় যখন দেখি বছরে মোট বারোটি মাস। বারো মাসের যে-বারোটা ধারাবাহিক নাম আছে তা ঋতুর দিকে ইঙ্গিত করে। যেমন, বৃষ্টির মাস, শাবকের মাস, বীজ বপন বা ফসল তোলার মাস। সমাজে সাধারণত চাঁদ ও সূর্য ভিত্তিক গণনার মধ্যে আরও ভালো সমন্বয়ের একটি প্রবণতা তৈরি হয়।

কৃষিজীবী জনগণ তাদের কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী সৌর বছরের সাথে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত। প্রকৃতি নিজেই এটি চাপিয়ে দেয় হাই ল্যাটিচুডে বাস করা জাতির ওপর। ল্যাব্রাডরের ইনুইটদের অন্ধকার শীতকালের (যখন বাইরের কাজ স্থবির থাকে) জন্য কোনো নাম নেই, কিন্তু বছরের বাকি সময়ের বিভিন্ন অংশের জন্য আছে চৌদ্দটি নাম। অনেক জাতি কৃষিকাজ বন্ধ থাকাকালীন মাসগুলোকে নামহীন রেখেছে; যেমন রোমানদের মূলত দশটি মাস ছিল (সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের নামগুলো সপ্তম থেকে দশম মাসের কথা বলে) এবং পরে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি যুক্ত করা হয়। আমাদের আধুনিক ক্যালেন্ডারের সাথে চাঁদের ফেইজের কোনো সম্পর্ক নেই, তবুও এর বারোটি মাসে প্রাচীন চাঁদভিত্তিক গণনার ঐতিহ্য রয়ে গেছে।

ক্যালেন্ডারে বেশিরভাগ কৃষিজীবী মানুষ মাস ও বছর দুইটাই ব্যবহার করে, বিশেষ করে দক্ষিণের দেশগুলোতে যেখানে বছরের ঋতু কম চরম। যেমন, পলিনেশিয়ান ও আফ্রিকার কালোরা পূর্ণিমায় তাদের নিয়মিত অনুষ্ঠান পালন করে, কিন্তু তাদের ফসল তোলার উৎসব ঋতুর ওপর নির্ভর করে। তারা জানে কতগুলো চাঁদ পেরোতে হবে ফসল তোলা ও বপনের জন্য এবং কোন মাসগুলো বন্য ফল ও শিকারের জন্য উপযুক্ত।

তবে এখানে একটি সমস্যা দেখা দেয় কারণ নতুন চাঁদ (অমাবস্যা) ও পূর্ণিমার সৌর তারিখগুলো একেক বছর একেক রকম হয়, ফলে চাঁদের ফেইজ নির্দিষ্ট কোনো ঋতুর সময় নির্দেশ করতে পারে না।

তখন একটি ভালো সমাধান দিয়েছিল তারা, যারা গতিপথের কারণে ইতিমধ্যেই মানুষের বেশ পরিচিত ছিল। সজাগ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, রাতের একই সময়ে তারার অবস্থান ঋতুর সাথে নিয়মিতভাবে পরিবর্তিত হয়। ধীরে ধীরে একই অবস্থান রাতে আগে আসতে শুরু করে; সবচেয়ে পশ্চিমের তারা সন্ধ্যার অন্ধকারে হারিয়ে যায় এবং ভোরের আলোতে নতুন তারা পূর্বের আকাশে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, যা প্রত্যেক মাসে ক্রমশ আগের চেয়ে আগে দেখা দেয়। এই ভোরের উদয় আর সন্ধ্যার উধাও ‘হেলিয়াকাল রাইজিং ও সেটিং’ নামে পরিচিত, যা এক্লিপ্টিকে সূর্যের বছরব্যাপী যাত্রা দিয়ে নির্ধারিত হয় এবং প্রতি বছর একই তারিখে ঘটে। একই ঘটনা ঘটে একটি তারা সন্ধ্যার অন্ধকারে উঠার (দৃশ্যমান উত্থানের শেষ) বা ভোরের ঠিক আগে অস্ত যাওয়ার সময়, যা ‘এক্রনিকিয়ান রাইজিং ও সেটিং’ বলা হয়। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা জানে বসন্ত শুরু হয় যখন প্লিয়াডিস সন্ধ্যায় উদিত হয়। টরেস স্ট্রেইটে বীজ বোনার সময় বুঝতে ভোরে কেক নামে একটি উজ্জ্বল তারা (ক্যানোপাস বে একার্নার) উদিত হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য নিয়মিত পাহারা বসানো হয়। জাভা দ্বীপে দশটি ‘মাংসাস’ (মাস) ওরায়নের বেল্টের অবস্থান দিয়ে ঠিক করা হয়; যখন এটি অদৃশ্য হয়, মাঠে কাজ থেমে যায় এবং ভোরের এর উদয় কৃষি বছরের শুরু নির্দেশ করে।

নাক্ষত্রিক ঘটনা সৌর বছরের তারিখ নির্ধারণের একমাত্র উপায় নয়; স্বয়ং সূর্যকেও ব্যবহার করা যেতে পারে। উত্তরে ২.৫ ডিগ্রি ল্যাটিচুডে বাস করা বোর্নিওর ডায়াকরা দুপুরে একটি ভার্টিকেল কাঠির ছায়ার দৈর্ঘ্য ব্যবহার করে; ছায়ার দৈর্ঘ্য শূন্য হলে প্রথম মাস শুরু হয়, আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাস শুরু হয় যখন ছায়া তার পূর্ণ দৈর্ঘ্যের যথাক্রমে ১/২ এবং ২/৩ ভাগ হয়। মহাকাম নদীতে বীজ বোনা শুরুর উৎসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয় দিগন্তে দুটি পাথর দিয়ে চিহ্নিত একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে সূর্যের অস্ত যাওয়ার দিন দিয়ে। আমেরিকার জুনি জাতির পুরোহিতরা উদযাপনের জন্য সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে ছোট দিন হিসাব করেন সূর্যের সবচেয়ে উত্তর ও সবচেয়ে দক্ষিণ সেটিঙের বিন্দু সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে; এবং একই কাজ ইনুইটরাও করে, যেখানে হাই ল্যাটিচুডের কারণে এই পদ্ধতি অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে আরও সঠিক।

সময়ের বিভাজন ও নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন প্রাচীন জাতি ও গোষ্ঠীকে নিয়ে গেছে জ্যোতিষ্ক পর্যবেক্ষণের দিকে এবং তার মাধ্যমে এস্ট্রোনমিকেল জ্ঞানের দিকে। আমরা নিশ্চিত, ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত যে এমন জ্ঞান প্রাগৈতিহাসিক সময়েই বিকশিত হয়েছিল। এই উৎস থেকে, সভ্যতার উত্থানের সময়, বিজ্ঞান সর্বপ্রথম আবির্ভূত হয়েছিল সবচেয়ে প্রাচীন কালচারের মানুষের মধ্যে, প্রাচ্যে।

mu/groei/1.txt · Last modified: 2024/10/17 10:27 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki