Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


এইচ-আর ডায়াগ্রাম

কোনো তারার সার্ফেস টেম্পারেচারের সাপেক্ষে লুমিনসিটি প্লট করলে যে ডায়াগ্রাম পাওয়া যায় তার নাম এইচ-আর বা হের্টস্প্রুং-রাসেল ডায়াগ্রাম। ডেনমার্কের আইনার হের্টস্প্রুং এবং যুক্তরাষ্ট্রের হেনরি নরিস রাসেলের নামে এর নাম রাখা হয়েছে। তবে অনেক সময় একে টেম্পারেচার-লুমিনসিটি ডায়াগ্রাম বা এমনকি কালার-ম্যাগ্নিচুড ডায়াগ্রামও ডাকা হয়। কারণ কালার থেকে টেম্পারেচার এবং এবসলুট ম্যাগ্নিচুড থেকে লুমিনসিটি বের করা যায়।

উপরের এইচ-আর ডায়াগ্রামে গায়া অব্জার্ভেটরি দিয়ে সূর্য থেকে পাঁচ হাজার লাইটিয়ারের মধ্যে দেখা প্রায় চল্লিশ লাখ তারার টেম্পারেচার ও লুমিনসিটি (বা কালার ও ম্যাগ্নিচুড) প্লট করা হয়েছে। নিচের হরিজন্টাল এক্সিসে আছে কালার, আর উপরের হরিজন্টাল এক্সিসে কেলভিন ইউনিটে টেম্পারেচার। কালার দেখানো হয়েছে $BP-RP$ দিয়ে যেখানে $BP$ গাইয়ার ব্লু-ব্যান্ডে তারাটির ম্যাগ্নিচুড আর $RP$ গাইয়ার রেড-ব্যান্ডে তারাটির ম্যাগ্নিচুড। $BP-RP$ কম হওয়া মানে তারাটি বেশি নীল (গরম), আর বেশি হওয়া মানে তারাটি বেশি লাল (ঠাণ্ডা)। বামের ভার্টিকেল এক্সিসে দেখানো হয়েছে গাইয়ার জি-ব্যান্ডে কোনো তারার এবসলুট ম্যাগ্নিচুড, আর ডানের ভার্টিকেল এক্সিসে আছে সূর্যের সাপেক্ষে লুমিনসিটি। সূর্যের লুমিনসিটি ১ ধরা হয়েছে। উপরের হরিজন্টাল এক্সিসে তাপমাত্রার নিচে তারার টাইপও উল্লেখ করা হয়েছে; ও-টাইপ তারা সবচেয়ে গরম আর এম-টাইপ সবচেয়ে ঠাণ্ডা।

এইচ-আর ডায়াগ্রামে বেশির ভাগ তারা একটা চিকন হেলানো রেখার মধ্যে পড়ে যার নাম মেইন সিকোয়েন্স। কোনো তারা মেইন সিকোয়েন্সে থাকার অর্থ তার কেন্দ্রে নিক্লিয়ার ফিউশন চলছে এবং তার আকার বাড়ছে না বা কমছে না, অর্থাৎ তারাটি স্থিতিশীল আছে, যেমন, সূর্য। কেন্দ্রে ফিউশন বন্ধ হয়ে গেলে তারাদের আকার বাড়া শুরু করে এবং এই ধরনের তারাদেরকে পাওয়া যায় জায়ান্ট ব্রাঞ্চে। আর মৃত্যুর পর যেসব স্টার হোয়াইট ডোয়ার্ফ হয়ে যায় তারা আশ্রয় পায় নিচের বাম কোণায় বাঁকা চাঁদের মতো একটা রেখায়।

সুতরাং একটা তারা জীবনেন একেক স্টেজে এইচ-আর ডায়াগ্রামের একেক জায়গায় থাকে। জন্মের আগে থাকে মেইন সিকোয়েন্সের বেশ খানিকটা ডানে, শৈশবে মেইন সিকোয়েন্সের কাছাকাছি চলে আসে, যৌবনে মেইন সিকোয়েন্সেই থাকে, বৃদ্ধ বয়সে চলে যায় জায়ান্ট ব্রাঞ্চে এবং মৃত্যুর পরে কবর পায় হোয়াট ডোয়ার্ফদের গোরস্থানে। মানুষের লেন্থ যেমন বয়সের সাথে পাল্টায় তেমনি তারাদের রেডিয়াস মেইন সিকোয়েন্স ও হোয়াইট ডোয়ার্ফ ছাড়া অন্য সব সময় পাল্টাতে থাকে। আর এই রেডিয়াস তারার টেম্পারেচার ও লুমিনসিটির সাথে এমনভাবে রিলেটেড যে এইচ-আর ডায়াগ্রামে আড়াআড়ি অসংখ্য কনস্টেন্ট-রেডিয়াস লাইন কল্পনা করা যায় যা নিচের স্নিপেটে দেখানো হয়েছে। স্নিপেটটি ইউনিভার্সিটি অফ নেব্রাস্কা-লিংকনের ন্যাপ ল্যাবস থেকে নেয়া এবং ছবির উপর ক্লিক করলে ন্যাপ ল্যাবসের আসল ইন্টারেক্টিভ সিমুলেশনটি পাওয়া যাবে।

সূর্যের সাপেক্ষে একটা তারার রেডিয়াস $R_s = \sqrt{L_s}/T_s^2$ যেখানে $L_s$ ও $T_s$ সূর্যের সাপেক্ষে তার লুমিনসিটি ও টেম্পারেচার। ডানের ফিগারে ৭টা সবুজ রঙের তির্যক রেখা দেখা যাচ্ছে, এগুলোই কনস্টেন্ট-রেডিয়াস লাইন। মানে একটা লাইনের উপরের সব বিন্দুতে রেডিয়াস সমান। কোনো তারা সবার উপরের লাইনে পড়লে তার রেডিয়াস হবে সূর্যের রেডিয়াসের ১০০০ গুণ, অর্থাৎ $1000 R_\odot$, আর সবার নিচের লাইনে পড়লে রেডিয়াস হবে সূর্যের রেডিয়াসের ১০০০ ভাগের এক ভাগ। ঠিক মাঝখানের রেখাটিতে পড়া সব তারার রেডিয়াস সূর্যের সমান। ন্যাপ ল্যাবসের এই এপ্লেট দিয়ে টেম্পারেচার ও লুমিনসিটি পাল্টিয়ে এইচ-আর ডায়াগ্রামে বিভিন্ন তারার পজিশন সিমুলেট করা যায়।

uv/hrd.txt · Last modified: 2023/10/30 09:59 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki